অনলাইন বিজনেসের জন্য কিভাবে ফেইসবুক পেইজের এক্টিভিটি ধরে রাখবেন

অনলাইন বিজনেসের জন্য কিভাবে ফেইসবুক পেইজের এক্টিভিটি ধরে রাখবেন

(একটু ধৈর্য নিয়ে পড়ুন। ছোট ছোট গল্পের মাধ্যমে সমস্যা তুলে ধরার এবং সমাধান দেবার চেষ্টা করবো)

অনলাইন বিজনেস করতে হলে অবশ্যই নিজের এক্টিভিটি জোরদার করতে হবে। অনেকে ভাবেন যে কি এমন এক্টিভিটি করবেন বা কিভাবে করবেন তাই দুই-চারদিন এক্টিভিটি করেই হাপিয়ে ওঠেন এবং ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে ব্যর্থ হন।

দুই-চারদিন পোষ্ট করেই যারা হতাশ হয়ে যান তাঁদের জন্য ছোট ছোট গল্প বলতে চাই।

#উদাহরণ_১:

মনে করুন, আপনি নতুন একটি বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। আপনি নতুন তাই কেউ তেমন চেনে না।

এবার দুইটা প্রসঙ্গ তুলে ধরিঃ

১। আপনি সপ্তাহে ১-২ দিন বিদ্যালয়ে যান

২। আপনি সপ্তাহে ৬ দিন বিদ্যালয়ে যান

এবার বলুন সপ্তাহে ৬ দিন গেলে চেনার সম্ভাবনা বেশি নাকি ১-২ দিন গেলে? উত্তর খুব সহজ। ৬ দিন গেলেই বেশি মানুষ আপনাকে চিনবে। তবে মনে করুন, আপনি ৬ দিন গেলেন ঠিকই কিন্তু কারো সাথে কথা বললেন না। তাহলে কিন্তু ৬ দিনে আপনাকে যত মানুষ চেনার কথা ছিল তার থেকে কম মানুষ চিনবে।

#উদাহরণ_২:

প্রচার করা একটা নিয়মিত প্রক্রিয়া। যেমন আপনি প্রতিদিন ৩ বেলা খাবার খান এবং তার ভেতর চা-নাস্তা খান। প্রচারটাও সেভাবেই নিয়মিত করে যেতে হবে। আপনি যদি একদিন খুব বেশি খান এবং অন্য দিনগুলোতে সেভাবে না খান তাহলে কিন্তু আপনার স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে না। কিন্তু যদি নিয়মিত ভালো খাবার খেতে থাকেন তাহলে কিন্তু কিছুদিন পর স্বাস্থ্যের উন্নতি চোখে পরবে এবং সেই উন্নতি ধরে রাখার জন্য নিয়মিত ভালো খাবার খেয়ে যেতে হবে।

তেমনি দুই-চারদিন প্রচার করে হাঁপিয়ে গেলে অদূর ভবিষ্যতে ভালো ফলাফল পাবেন না।

#উদাহরণ_৩:

নিয়মিত পড়াশোনা করলে রেজাল্ট ভালো হয় নাকি অনিয়মিত পড়লে রেজাল্ট ভালো হয়? তাহলে এবার নিজেই বলুন যে ভবিষ্যতে ভালো কিছু করতে হলে নিয়মিত প্রচার করা উচিত নাকি অনিয়মিত?

 

শুধু মনে রাখবেন। আপনি যতই ভালো হন না কেন বা আপনার প্রোডাক্ট এবং সার্ভিস যতই ভালো হোক না কেন সেটার যদি ভালো প্রচার না থাকে তাহলে সেটা তত মানুষের কাছে পৌঁছাবে না যত মানুষের কাছে পৌঁছানোর কথা ছিল। আর আপনি যখন কিছু নিয়ে নিয়মিত এক্টিভিটি দেখাবেন তখন কিন্তু মানুষ বুঝে যাবে যে আপনি কে, কি করেন, আপনি বিশ্বস্ত কিনা, অভিজ্ঞতা আছে কিনা, মার্কেটে আপনার রেপুটেশন আছে কিনা, ইত্যাদি ইত্যাদি।

 

ফেইসবুক পেইজের এক্টিভিটি কিভাবে উপস্থাপন করবেন—

১। ফেইসবুকের স্পেশাল এবং রিলিভেন্ট symbol, emoji, emoticon ইত্যাদি ব্যবহার করে প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের বর্ণনা উপস্থাপন করবেন। মানুষের বেশি সময় নেই তাই বর্ণনা যতটা ছোট, তথ্যবহুল, impactful, এবং eye-catchy করা যায় চেষ্টা করুন।

২। প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের ছবি ব্যবহার করুন। ছবির উপর খুব বেশি টেক্সট লিখবেন না। ছবিতে Call-to-action থাকতে হবে। মানে ছবি দেখে যেন মানুষ আগ্রহ অনুভব করে, তাঁদের আগ্রহ যেন আরো ঘনীভূত হয় এবং তাঁরা সেটা কেনার জন্য আপনাকে কল বা ইনবক্স করে। তাহলেই ভাবুন কতটা প্রোফেশনাল হতে হবে। যদি আপনি নতুন হয়ে থাকেন তাহলে বিষয়গুলো জেনে নিবেন কিন্তু তাই বলে অনিয়মিত হবেন না। ছবির সাথে ক্যাপশনে ১-২ লাইন বর্ণনা দিবেন।

৩। ভিডিও কনটেন্ট অন্য যেকোন কনটেন্ট থেকে ৭৫-৯৫% পর্যন্ত reach & engagement বাড়তে সক্ষম।

৪। Infographics কনটেন্ট উপস্থাপনের জন্য খুবই শক্তিশালী একটি পদ্ধতি। একটা ছবির ভেতর বড় একটা কনটেন্টকে শুধুমাত্র গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টের মাধ্যমে উপস্থাপন করতে এবং গ্রাহককে আকৃষ্ট করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।

৫।  ফেইসবুক লাইভ করুন। বাজেট থাকলে সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের কাজে লাগান। তাছাড়া প্রশ্নোত্তর পর্ব করুন, ক্লায়েন্টকে লাইভে এনে মতামত নেবার চেষ্টা করুন, কিভাবে লাইভে variation আনা যায় সেই চেষ্টা করুন।

৬। যারা আপনার ক্লায়েন্ট হবে তাদেরকে বিনয়ের সাথে রিভিউ দেবার জন্য অনুরোধ করুন এবং তাঁরা রিভিউ দিলে সেটা নিজের পেইজে, টাইমলাইনে, বিভিন্ন গ্রুপে, স্টোরিতে শেয়ার করুন।

৭। প্রোডাক্ট যখন প্যাকেটিং করবেন, যাকে ডেলিভারি করবেন, কুরিয়ারের ডকুমেন্ট, নিজের দোকান/ শোরুম/ ফ্যাক্টরি/ ওয়ার্কপ্লেস ইত্যাদি থাকলে সেটা রিপ্রেজেন্ট করবার চেষ্টা করুন।

৮। ফেইসবুক স্টোরি কিন্তু এখনকার রিসেন্ট ট্রেন্ড। তাই নিয়মিত টাইমলাইন আপডেট রাখুন।

৯। বিভিন্ন গ্রুপে পজেটিভ ভাবে নিজেকে উপস্থাপনের চেষ্টা করুন। কিছু কিছু গ্রুপে সরাসরি নিজের পেইজ শেয়ার করা যায়, আবার কিছু কিছু গ্রুপে কিছু নিয়ম-কানুন আছে সেগুলো পড়ে ও দেখে সেভাবে পোষ্ট করুন।

১০। নিজের ফেইসবুকের এবং অফলাইনের বন্ধুগুলোকে মাঝে মাঝে হাই- হ্যালো করুন। হয়ত নিজেদের মানুষের ভেতর কম মানুষই পাবেন যে আপনার ক্লায়েন্ট হবে। তবে তাঁরা যদি আপনার পেইজের পোষ্টে লাইক দেয় তাহলেও কিন্তু আপনার জন্যই উপকারে আসবে। তাছাড়া বিভিন্ন প্রোডাক্ট নিয়ে কথা বলে প্রোডাক্টের ডিমান্ড, বা মার্কেটিং পলিসি বা ক্রেতাদের পছন্দ-অপছন্দ সম্পর্কে ধারণা পাবেন।

১১। টার্গেট অডিয়েন্স সেট করে বুষ্ট করতেই হবে। তবে আগে উপরের কাজগুলোর নিয়মিত ধারাবাহিকতা বজায় রেখে।

১-৭ নাম্বার পয়েন্টগুলো প্রতি সপ্তাহে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে করুন। মানে এক এক দিন এক একটা বা দুইটা। ৮-১০ নাম্বার পয়েন্টগুলো প্রতিদিন করুন।

সোজা কথা, নিয়মিত যেকোন কাজ বুঝে করলে আপনি ঠিকই দক্ষতা অর্জন করবেন এবং সাফল্য আসবেই। আপনি আপনার প্রোডাক্ট নিয়ে যত কথা বলবেন আপনাকে তত মানুষ চিনবে। তবে সততা, প্রোডাক্টের ভালো সোর্সিং , বিনয়, বস্তুনিষ্টতা, প্রোফেশনালিজম, আপডেট থাকার মনোভাব, উন্নত চিন্তা-চেতনা ইত্যাদি থাকতে হবে।

বি.দ্রঃ আপনার যেকোন ধরনের ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট, কাস্টমাইজ সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং, আইটি কনসালটেন্সি ও অনলাইন বিজনেস গ্রোথ হ্যাকিং কনসালটেন্সির জন্য যোগাযোগ করুন।

Website URL: www.smartwebsource.com

Facebook Page: www.fb.com/smartwebsource

Cell No: 01913 37 68 96