Smart web source

স্মার্ট প্রেমিক/ প্রেমিকা থেকে স্মার্ট উদ্যোক্তা

প্রাচীন কালের প্রেম হতো– 

  • চিঠি চালাচালির মাধ্যমে। আর চিঠি চালাচালির মাধ্যম ছিল কবুতর বা পোষা পাখি অথবা বিশ্বস্ত কোন মানুষ
  • তারপর ডাকঘরের মাধ্যমে। আর তা পৌঁছে দিতো ডাকপিয়ন
  • তারপর চলে এলো টেলিফোন
  • তারপর চলে এলো মুঠোফোন বা ফিচার ফোন
  • আর এখন সবার হাতে হাতে স্মার্টফোন এবং সেই স্মার্টফোনে আছে কত শত আধুনিক সফটওয়্যার 

স্মার্ট প্রেমিক/প্রেমিকা এভাবেই তাদের কৌশল বদলেছে যুগের সাথে তাল-মিলিয়ে। আর যারা পারেনি তাদের খবর কেউ রাখেনি। 

তারমানে কি প্রেম বদলে গেছে ? 

উত্তরঃ  না, বদলে গেছে শুধু কৌশল আর মাধ্যম। 

এবার আপনারা যারা সেই আদিযুগের কৌশল ব্যবহার করে ব্যবসা করছেন তাদের কি পরিবর্তন দরকার আছে নাকি নেই? নাকি আরো কিছুদিন পরে পরিবর্তন করলেও চলবে ? 

উত্তরঃ  কি মনে আছে নিশ্চয় নোকিয়ার কথা? কোডাক ক্যামেরার কথা?  কোডাক ক্যামেরা যুগের সাথে তাল না মিলিয়ে দেউলিয়া হয়ে গেছে আর নোকিয়া নিজেদের পরিবর্তন করতে এতোটাই দেরি করে ফেলেছে যে তাদের নিকটবর্তী প্রতিযোগী তাদের কে যে কখন হারিয়ে দিয়েছে তা তারা বুঝতেও পারেনি। 

তার মানে শুধু কৌশল পরিবর্তন করলেই হবে? না, সঠিক সময়ে পরিবর্তন করতে হবে। 

আপনারা যারা এখনও ভাবছেন যে অনলাইন এ নিজের অস্তিত্ব জানান দেবার এখনও সময় আসেনি বা নিজেদেরকে সবার সামনে উপস্থাপনে এখনও পিছিয়ে আছেন তাদের জন্য সামনে এক বড় অশনি সংকেত অপেক্ষা করছে। 

তাহলে বাঁচতে হলে উপায় কি ? 

উত্তরঃ  অবশ্যই সোশ্যাল মিডিয়ার পাশাপাশি অনলাইনে স্থায়ী ঠিকানা হিসাবে ওয়েবসাইট থাকা অতীব প্রয়োজন। তবে .শুধু থাকলেই হবে না। প্রতিটা জায়গায় নিজের এক্টিভিটি ধরে রাখতে হবে। যেমনঃ খেলোয়াড়রা প্রতিদিন শরীর চর্চার পাশাপাশি নিজেদের খেলাধুলা প্র্যাকটিস করে থাকে। 

আগে যেমন কোন প্রোডাক্ট বাজারে আনার আগে সেটা নির্দিষ্ট অডিয়েন্সের কাছে সার্ভে করা হতো । আর সেজন্য অনেক সময় এবং  অর্থ বিনিয়োগ করা হতো। 

আবার কোন প্রোডাক্ট বাজারে আনলে সে সম্পর্কে চটকদার বিজ্ঞাপন করা হতো। অনেকে বলতো যে টেলিভিশনের বিজ্ঞাপন ঘরের বেডরুম পর্যন্ত পৌছাতে সক্ষম। 

কিন্তু এখন সনাতন পদ্ধতির মার্কেটিং এর সাথে যুক্ত হয়েছে ডিজিটাল মাধ্যম যা নতুন মাত্রা যোগ করেছে।  আর ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে খুব সহজে, কম সময়ে, কম অর্থ বিনিয়োগ করে মার্কেট সার্ভে করা যায়। আর স্মার্টফোন এবং ইন্টারনেট টেলিভিশনের থেকেও দ্রুত ও কার্যকরী ভাবে মার্কেটিং এ ভূমিকা পালন করছে। 

ডিজিটাল মার্কেটিং এর যে পদ্ধতি গুলো না জানলেই নয়- 

  • সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং (পেইড + অরগানিক) 
  • সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং
  • সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন 

এগুলো কি নিজেই সব করতে হবে ? 

উত্তরঃ  অনেক সময় দেখা যায় নিজেই সব কাজ করা যায় না। আর যদি করতেও হয় তাহলে অনেক সময় দেখা যায় গুরুত্বপূর্ণ কাজে বিঘ্ন ঘটতে পারে। তবে প্রতিটি বিষয়ে সাম্যাক ধারণা থাকতে হবে।    

কাদের দিয়ে এই কাজগুলো করিয়ে নিতে পারি ? 

উত্তরঃ  যারা দক্ষ তাদের দিয়ে কাজগুলো করাবেন। আর যারা দক্ষ তারা কখনই ফ্রিতে বা অল্প বা সামান্য পেমেন্টে কাজ করবে না। সেক্ষেত্রে এই খরচগুলোকে নিজের ইনভেস্টমেন্ট হিসাবে দেখতে হবে। 

কেউ আপনাকে কমে করে দিলেই সেটাকেই স্ট্যান্ডার্ড হিসাবে ধরে নিলে কিছুদিন পরে যখন বিপদে পড়বেন তখনই বুঝতে পারবেন। আর সাময়িক ভাবে নিজেকে লাভবান মনে হতে পারে কিন্তু সস্তার কাজে দীর্ঘমেয়াদী যে যাত্রাপথ তা মসৃণ হবে না। 

তাই পরিশেষে আমরা বলতেই পারি যে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে সঠিক পথ অনুসরণ করে এগিয়ে যেতে হবে। তাহলেই সাফল্য আপনার পদচুম্বন করবে আর না হলে আপনি হারিয়ে যাবেন অতল গহ্বরে।  

কারা দক্ষ বুঝতে পারবো কিভাবে ? 

উত্তরঃ  আপনারা অনেক সময় দুই একজনের সাথে কথা বলেই বিশ্বাস করে ফেলেন। আবার অনেক সময় এমন হয় যে এতো জনের সাথে কথা বলেন যে কনফিউশনে ভুগে কোন দিকেই এগোতে পারেন না বা ভয় পান। 

কিন্তু যদি এমন হয় আপনি তাদের কথাগুলো বোঝার চেষ্টা করেন, একজনের সাথে অন্যজনের কথা compare করার চেষ্টা করেন, তাদের পূর্ববর্তী কাজ গুলো দেখেন, তাদের ব্যাপ্তি বা অস্তিত্ব বা হিস্টরি সম্পর্কে জানতে চেষ্টা করেন তাহলেই আপনি অনেক কিছুই বুঝতে পারবেন। 

এখন তো আর গিয়ে গিয়ে সবার খোজ নেবার কিছু নেয়। প্রথমে দরকার হয় অনলাইনের মাধ্যমেই বোঝার চেষ্টা করলেন। তারপর শর্টলিস্ট করে ফিজিক্যালি মুভ করার চেষ্টা করতে পারেন। 

আচ্ছা আমার তো সোশ্যাল মিডিয়া, ওয়েবসাইট সব আছে এবং ডিজিটাল মার্কেটিং ও মাঝে মাঝে করি তাও ব্যবসা ঠিক ভাবে হচ্ছে না কেন ?

সোশ্যাল মিডিয়া ও ওয়েবসাইটে রেগুলার এক্টিভিটি করতে হবে এবং সেই সাথে ওয়েবসাইট রেগুলার আপডেট রাখতে হবে। আর ডিজিটাল মার্কেটিং হল একটি চলমান প্রক্রিয়া যেটা নিয়মিত নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে করতে হবে। 

আপনার স্বল্প-মেয়াদী, মধ্য-মেয়াদী এবং দীর্ঘ-মেয়াদী পরিকল্পনা থাকতে হবে যেটা অনেকেরই থাকে না। ব্যাকআপ প্লান থাকতে হবে এবং শেখার অভ্যাস ত্যাগ না করে নিয়মিত শেখার চেষ্টা করতে হবে।